অ্যাঙ্গা-অ্যাঙ্গা : বা বাঘ-ছাগ

ছেলেমেয়ে উভয়েরই দলবদ্ধ খেলা। এক্ষেত্রে প্রথমে একটি বড় বৃত্ত অাঁকা হয়। একজন খেলোয়াড় এই বৃত্তের বাইরে থাকে; সে হয় বাঘ’, আর অন্যরা বৃত্তের ভেতরে অবস্থান গ্রহণ করে এবং তারা হয় ছাগলবাঘ বৃত্তের চারপাশে ঘুরে বেড়ায় আর ছড়া কেটে কেটে ভেতরে অবস্থানকারীদের ভোলানোর চেষ্টা করে। যশোরে প্রচলিত এরূপ একটি ছড়া হলো:.....


  • বাঘ (ক্রন্দনের সুরে)- অ্যাঙ্গা অ্যাঙ্গা। 
  • ছাগদল- (সমস্বরে) কাঁদ ক্যা
  • বাঘ গরু হারাইছে। 
  • ছাগদল- কি গরু? 
  • বাঘ- নাঙ্গা গরু। 
  • ছাগদল- শিঙ্গি কি
  • বাঘ কুষ্টার অাঁশ। 
  • ছাগদল- একটা গান গাওছিন’ 

বাঘ তখন নাচের ভঙ্গিতে ঘুরে ঘুরে গান গায়: এতি চোর বেতি চোর, এতি চোর বেতি চোর, চলে আয় আমার সিয়ানা চোর।গান শেষ করেই বাঘ লাফ দিয়ে বৃত্ত থেকে একটা ছাগল ধরে টানতে থাকে; অন্যরা বাধা দেয়। বাঘ তাকে ঘরের বাইরে নিতে পারলে সে বাঘের দলভুক্ত হয়। শেষপর্যন্ত যে ঘরে থাকে সে পরবর্তী খেলায় বাঘ হওয়ার সুযোগ পায়।
এ খেলায় অরণ্যজীবনের ছায়াপাত ঘটেছে, কারণ এক সময় পশুশিকারী অরণ্যচারী মানুষদের ব্যাঘ্রাদি হিংস্রপ্রাণীর সঙ্গে লড়াই করে বাঁচতে হতো। এছাড়া বাঘ ও ছাগল টোটেমভুক্ত দুই মানবগোষ্ঠীর মধ্যেকার দ্বন্দ্ব ও পরাজিত গোত্রকে দাস-শ্রমিক হিসেবে নিযুক্ত করার প্রসঙ্গটিও এক্ষেত্রে থাকতে পারে।