বাংলার
সর্বাঞ্চলীয় একটি জনপ্রিয় খেলা। প্রধানত কম বয়সের ছেলেরা এটি খেলে থাকে;
মেয়েরা ডাংগুলি খেলে না। দুই থেকে পাঁচ-ছয়জন করে দুই দলে
বিভক্ত হয়ে এটি খেলতে পারে। দেড় হাত লম্বা একটি লাঠি এবং এক বিঘত পরিমাণ একটি
শক্ত কাঠি খেলার উপকরণ। প্রথমটিকে ‘ডান্ডা’ ও দ্বিতীয়টিকে ‘গুলি’ বা ‘ফুত্তি’ বলা হয়।
প্রথমে খোলা মাঠে একটি ছোট গর্ত করা হয়। যারা দান পায় তাদের একজন গর্তের ওপর
গুলি রেখে ডান্ডা মেরে সেটিকে দূরে ফেলার চেষ্টা করে। প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়রা
চারদিকে দাঁড়িয়ে থেকে সেটিকে লুফে নিতে চায়। তারা সফল হলে ওই খেলোয়াড় আউট হয়,
আর ধরতে না পারলে গর্তের ওপর রাখা ডান্ডা লক্ষ করে ছুঁড়ে মারতে
হয়। ছোঁয়া গেলে সে দান হারায়, আর তা না হলে সে ডান্ডা
দিয়ে তুলে গুলিকে আবার দূরে পাঠায়। পরে গুলি থেকে গর্ত পর্যন্ত ডান্ডা দিয়ে
মাপতে থাকে। সাত পর্যন্ত মাপের আঞ্চলিক নাম হলো: বাড়ি, দুড়ি,
তেড়ি, চাঘল, চাম্পা,
ঝেঁক, মেক।...
বা (ঘোড়া, দুরি, তিনি, চারি,পাচি, ছয়, ভয়।)
এরূপ সাত মাপে এক ‘ফুল’ বা ‘গুট’ এবং সাত
ফুলে এক ‘লাল’ হয়। ভাঙা ফুলের
ক্ষেত্রে যেখানে শেষ হয়, পরের খেলা সেখান থেকে শুরু হয়।
বাড়ি, দুড়ি ইত্যাদি প্রতিটি মারের পৃথক পৃথক পদ্ধতি
আছে। আউট না হওয়া পর্যন্ত একজন খেলোয়াড় খেলতে পারে; আউট
হলে দলের দ্বিতীয় একজন একই পদ্ধতিতে খেলবে। এভাবে সবাই আউট হয়ে গেলে বিপক্ষ দল
দান পেয়ে খেলা শুরু করে। বস্ত্তত এ খেলাটি বর্তমান যুগের ক্রিকেটের গ্রাম্য
সংস্করণ এবং ব্যাট ও বল ডান্ডা ও গুলির সমতুল্য। এ ক্ষেত্রেও ক্যাচ ধরে বা
ডান্ডায় আঘাত করে আউট করার বিধান আছে। খেলাটি অঞ্চলভেদে ‘ডাংবাড়ি’, ‘গুটবাড়ি’, ‘ট্যামডাং’, ‘ভ্যাটাডান্ডা’ ইত্যাদি নামে পরিচিত।