উচ্চলাফের
নিয়মাবলি:
১. উচ্চলাফ শুরুর পূর্বে প্রতিযোগীদের লাফের সম্পর্কে
অবহিত করতে হবে এবং প্রতি রাউন্ড
উচ্চতা কী পরিমান বাড়াতে হবে তা ঘোষণা করতে হবে।
২. রাউন্ড শেষে কমপক্ষে ২ সেন্টিমিটার উঠাতে হবে।
৩. রানওয়ের দৈর্ঘ্য কমপক্ষে ১৫ মিটার হবে।
৪. একজন প্রতিযোগী তার সুবিধার জন্য
রানআপ ও টেক অফ মিলানোর জন্য একাধিক মার্কার ব্যবহার করতে পারবে।
৫. দু’খুঁটির মধ্যে
দূরত্ব থাকবে ৪.০৪মিটার।
৬. ক্রসবার ধাতু, কাঠ বা ঐ জাতীয়
কোন বস্তু দ্বারা তৈরি হবে। দৈর্ঘ্য হবে ৩.৯৮ থেকে ৪.০২ মিটার, ব্যাস ২৯ মি:মি: থেকে ৩১ মি:মি:।
৭. উচ্চলাফের ল্যান্ডিং এরিয়ার মাপ ৫X৫ মিটার।
৮. একজন প্রতিযোগী কখন একটি সুযোগ হারায়-
ক) নাম ডাকার ৯০ সেকেন্ডের মধ্যে লাফ দিতে না পারলে।
খ) লাফ দেওয়ার সময় ক্রসবারের লাইন অতিক্রম করলে।
গ) দু’পায়ে টেক অফ
নিলে।
ঘ) লাফ দেওয়ার সময় ক্রসবার পড়ে গেলে।
উচ্চলাফের
কৌশল : যে কৌশলেই লাফ দেওয়া হোক না
কেন, লাফ দেওয়ার সময় চারটি পর্যায় অতিক্রম করতে হয়।
১. অ্যাপ্রোচ রান , ২. টেক অফ,
৩. ক্রসবার অতিক্রম করা, ৪. ল্যান্ডিং
১. দৌড়িয়ে আসাকে অ্যাপ্রোচ রান বলে।
২. দৌড়িয়ে এক পায়ে ভর দিয়ে ওঠাকে টেক অফ বলে।
৩. যে কোন পদ্ধতিতে ক্রসবারটি অতিক্রম করতে হবে।
৪. ক্রসবার অতিক্রমের পর মাটিতে পড়াকে ল্যান্ডিংক বলে।
উচ্চ
লাফ দেওয়ার পদ্ধতি তিন প্রকার-
১.ওয়ের্স্টন রোল ২. বেলি রোল ৩. ফসবেরি ফ্লপ
১. ওয়েস্টার্ন রোল :
এ পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য হলো যে পায়ে টেক অফ নেবে, দু’হাত ও সেই পায়ের উপরই ল্যান্ডিং হবে। বাম
পায়ের উপর টেক অফ নিলে ক্রসবার অতিক্রম করার পর বাম পায়ের উপরই ল্যান্ডিং হবে।
ক. সাধারণত সাত পদক্ষেপ দৌড়ে এসে লাফ দেওয়া হয়। উচ্চতা
কম হলে পাঁচ পদক্ষেপই যথেষ্ট।
খ. লাফানোর জন্য দৌড় শুরু করার সময় ক্রসবারের সাথে ৪৫
ডিগ্রী থেকে ৬০ ডিগ্রী কোণ সৃষ্টি করে দাাঁড়তে হবে।
গ. মাটি ছেড়ে ওঠার সময় শেষের তিনটা পদক্ষেপ দ্রুত এবং
অপেক্ষাকৃত লম্বা হবে।
ঘ. পিছনের পাকে খুব জোরে উপরেরর দিকে ছুড়ে দিয়ে যে
পায়ের উপর ভর দিয়ে মাটি ছাড়তে হবে সেই পায়ের গোড়ালি থেকে পাতার উপর সম্পূর্ন গড়িয়ে
এনে পাকে সোজা করে মাটি ছেড়ে উপরে উঠাতে হবে।
ঙ. যে পা দিয়ে মাটি ছাড়া হবে, পরে সেই পায়ের হাঁটু ভেঙ্গে উপরে তুলতে হবে।
চ. ক্রসবারের উপর সর্ম্পূণ শরীরটাকে ঘুরিয়ে দিয়ে সে
দিকের কাঁধকে ক্রসাবারের উপর খাড়াভাবে রেখে ক্রসবার
অতিক্রম করবে।
ছ. যে পায়ে ল্যান্ডিং সেই পা ও দু’হাতের উপর ভর করে ল্যান্ডিং করতে হবে।
২.
বেলি রোল : এই পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য হলো যে পায়ে টেক অফ নিবে তার বিপরীতে পা ও দু’হাতের উপর ভর করে ল্যান্ডিং করতে হবে। ফোমের উপর হলে নিজের সুবিধে মতো
পিঠের উপরও ল্যান্ডিং করা যেতে পারে। এই পদ্ধতিতে মনে রাখতে হবে-
ক. দৌড়ে আসার কোণ ক্রসবারের সাথে ২৫ ডিগ্রী-৪০ ডিগ্রী
হবে।
খ. টেক অফ এর সময় শেষের পদক্ষেপগুলো দ্রুত ও লম্বা হবে।
তবে মাটি ছাড়ার পর বিপরীত পা ও সে দিকের হাতকে ক্রসবারের উপর প্রথমে নিয়ে যেতে
হবে।
গ. ক্রসবারের উপরে এলে শরীরের উপরের অংশটাকে নিচের দিকে
ঝুঁকিয়ে দিতে হয়। তাতে পেটের দিকটাকে ক্রসাবরের কাছাকাছি রাখা যায়।
ঘ. যে হাত ও পা প্রথমে নামছে সে দিকের দেহের উপরের অংশ
(কাঁধ থেকে কোমর পর্যন্ত) মাটিতে নামিয়ে হাতকে দেহের ভিতরের দিকে ঠেলে দিয়ে গড়িয়ে
দিতে হবে।
৩.
ফসবেরি ফ্লপ : ১৯৬৮ সালে মেক্সিকো অলিম্পিকে
আমেরিকার ডিক ফসবেরি এক নতুন পদ্ধতিতে উচ্চ লাফ দিয়ে সোনার মেডেল পান তখন থেকে তার
নামানুসারে এই ফসবেরি ফ্লপের প্রচলন হয়। এটা বর্তমানে সর্বজনীন পদ্ধতি তবে মনে
রাখতে হবে ফোমের ম্যাট ছাড়া এ পদ্ধতিতে লাফ দেওয়া সম্ভব নয়।
ক. ক্রসবারের সাথে ৯০ ডিগ্রী কোণ করে দাঁড়িয়ে দৌড় শুরু
করতে হয় এবং অর্ধবৃত্তাকারে ক্রসবারের কাছে আসতে হয়।
খ. শরীরের মাঝখানটাকে পিছনের দিকে ঝুঁকিয়ে দিয়ে টেক অফ
পা দেহের ভর কেন্দ্রের সামনে রাখতে হবে। এরপর দ্রুত জোরের সাথে উপরের দিকে উঠতে
হবে। একই সাথে অপর পাটাকে দুলিয়ে উপরের ডান কাঁধের লাইনে নিয়ে যেতে হবে। তার ফলে
পিঠ ক্রসাবরের দিকে চলে আসবে।
গ. দেহ মাটি ছেড়ে যখনই উপরে উঠবে, সাথে সাথে হাত দুটো পাশে দেহের সমান্তরালে এনে মাথা মধ্য শরীর ও কোমরের
নিচের অংশ ক্রসবারের উপর দিয়ে পার করতে হবে। হা ও পা দুটো উপরের দিকে থাকবে এবং
পিঠের উপর অবতরণ করবে।